ইরানের হামলা রুখতে ইসরায়েলকে সহায়তা করায় জর্ডানে বিক্ষোভ



 ইসরায়েলে ইরানের হামলায় তেল আবিবকে সহায়তা করায় জর্ডানে সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। ইরান গত শনিবার ইসরায়েলের ওপর তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এগুলো যেন ইসরায়েল পর্যন্ত না পৌঁছে, সেই চেষ্টা করেছে জর্ডান।

আত্মরক্ষার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে দাবি করেছে জর্ডান সরকার। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এগুলো আমাদের জনগণ ও জনবহুল এলাকার জন্য হুমকিস্বরূপ ছিল।’

কিন্তু কয়েক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা জর্ডানের নাগরিকেরা সরকারের এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করেছেন।


হুসেইন নামের দেশটির এক ব্যক্তি বলেন, ‘জর্ডান যেভাবে ইসরায়েলকে রক্ষা করেছে, তাতে আমি খুবই বিরক্ত। এখানকার অনেকেই এটা মেনে নিচ্ছেন না। আমরা ইরানকে সমর্থন করি না এবং গাজায় এখন যা ঘটছে, তার পেছনে ইরানের বড় ভূমিকা আছে বলে মনে করি। কিন্তু গাজায় ইসরায়েলের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে—এমন যেকোনো পদক্ষেপের সঙ্গে আমরা আছি।’

মারিয়াম নামের আম্মানের এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বলেন, ‘জর্ডানে ইরানের জনপ্রিয়তা নেই। কিন্তু আমি ইরানের নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্র জর্ডানের বাধা দেওয়া ও অনিচ্ছাকৃতভাবে এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া প্রত্যাখ্যান করি।’


জর্ডানের রানিসহ প্রতি পাঁচজনের একজন ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত।
আম্মানের সামরিক বিশ্লেষক মাহমুদ রিদাসাদ বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে, সেটিকে কখনো ইসরায়েলকে রক্ষার জন্য করা হয়েছে, তেমনটা বলা যাবে না; বরং জর্ডানের সার্বভৌমত্ব ও আকাশসীমা রক্ষার জন্য করা হয়েছে। কারণ, ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্র কোথায় পড়বে, তা জানা যায় না।

জর্ডান সহায়তা করেছে বলে ইসরায়েলের গণমাধ্যমে আনন্দের খবর প্রকাশ সম্পর্কে রিদাসাদ বলেন, এটা ইসরায়েলের অপপ্রচার ছাড়া আর কিছু নয়।


বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসভিত্তিক থিংক ট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ফিলিস্তিনবিষয়ক বিশ্লেষক তাহানি মুস্তফা জানান, ইসরায়েলে ইরানের হামলার ঘটনা নিয়ে জর্ডানের নাগরিকেরা বিভক্ত। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সঙ্গে জর্ডানের অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা সম্পর্ক নিয়ে মানুষ বিস্তারিত জানেন না। কারণ, এসব বিষয় নিয়ে এখানে বেশি লেখা হয় না।

২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও জর্ডানের মধ্যে একটি প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি সই হয়েছিল। কিন্তু এ ক্ষেত্রে জর্ডানের সংসদের অনুমোদন নেওয়া হয়নি বলে সমালোচনা রয়েছে। এই চুক্তির আওতায় মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্য, পরিবহন ও বিমান বাধা ছাড়াই জর্ডানে ঢুকতে ও ঘুরে বেড়াতে পারবে।


গাজা নিয়ে আম্মানে বিক্ষোভ শুরুর পর অনেকে জর্ডান থেকে মার্কিনদের তাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলতে শুরু করেন বলে জানান তাহানি মুস্তফা।

কয়েক সপ্তাহ ধরে আম্মানে ইসরায়েলের দূতাবাসের সামনে জড়ো হয়ে কয়েক হাজার স্থানীয় মানুষ বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। তাঁরা ১৯৯৪ সালে ইসরায়েল ও জর্ডানের মধ্যে সই হওয়া শান্তি চুক্তি বাতিলেরও আহ্বান জানান।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

টঙ্গি বাজারে আগুনে পুড়েছে মসলার গুদাম

ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৫

Dolphins Clinch Playoff Spot with Thrilling Victory Over Cowboys in Week 16 NFL Action